জাপানে পড়াশুনা ও শিক্ষাবৃত্তির বিস্তারিত তথ্য
জাপান অর্থনৈতিক দিক থেকে যেমন এশিয়া এর মধ্যে উন্নত তেমনি দেশটি শিক্ষাব্যবস্থার দিক থেকেও এগিয়ে চলেছে। জাপানের উচ্চশিক্ষার মান বর্তমানে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সারা বিশ্বেই তা গ্রহণীয় ও সমাদৃত হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ছাত্রছাত্রীরা উচ্চশিক্ষার জন্য জাপানে পাড়ি জমাচ্ছেন। বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীরাও পাচ্ছেন পড়াশোনার অনেক সুযোগ। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে অনেক ছাত্রছাত্রীরা মনবুশো বৃত্তি নিয়ে জাপানে পাড়ি জমাচ্ছেন। এ ছাড়া জাপানে গিয়ে Jasso, টোকিও ফাউন্ডেশন বা আঞ্চলিক কিছু বৃত্তিও পেতে পারেন। আর তাই নিজের ভবিষ্যৎ আরও উন্নত করতে জাপানে উচ্চশিক্ষা নিতে কিছু বিষয় জেনে নেওয়া যাক।
জাপান হতে প্রদত্ত ডিগ্রির নামঃ
- ব্যাচেলর ডিগ্রি,
- মাস্টার্স ডিগ্রি ও
- ডক্টোরাল ডিগ্রি।
কোর্সের সময়সীমাঃ
১. মাস্টার ডিগ্রি সম্পন্ন করতে দুই বছর সময় লাগবে।
২. ডক্টোরাল ডিগ্রি সম্পন্ন করতে তিন বছর সময় লাগবে। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্র-ছাত্রীদের পিএইচডি প্রোগ্রাম চার (৪) বছরের।
মাস্টার্স ডিগ্রির অথবা পিএইচডি তে আবেদনের যোগ্যতাঃ
- একাডেমিক কমপক্ষে ১৬ বছরের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে।
- জাপানি ভাষার ওপর পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। তবে, জাপানি ভাষার ওপর দক্ষতা থাকলে আপানর জন্য ভাল।
- বর্তমানে প্রতিযোগিতার কারণে IELTS / TOEFL দিয়ে রাখা ভাল। এটা আপনাকে সামনে এগিয়ে রাখবে।
- কিছু Publication থাকা ভাল।
কিভাবে শুরু করবেন?
সর্বপ্রথম আপনাকে আপনার গবেষণার আগ্রহ এর উপর প্রোফেসর সন্ধান করে তার বরাবর ইমেইল এর মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হবে। কিভাবে আপনি আবেদন করবেন সে ব্যাপারে, প্রফেসর আপনাকে পরবর্তী নির্দেশনা দিবেন। আপনি ইউনিভার্সিটি এর ওয়েবসাইটে ঢুকেও নির্দেশনা পেতে পারেন। আমার অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু তথ্য বলছি আপনাদের সুবিধার্থে—
- প্রফেসর আপনার কাছে আপনার Graduation এর Transcript চাইতে পারেন।
- প্রফেসর আপনাকে Skype Interview নিতে পারেন।
- প্রফেসর আপনাকে Research Proposal তৈরি করতে বলতে পারেন।
- প্রফেসর আপনাকে Basic কোন বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে পারেন।
Skype Interview দেওয়ার আগে আপনাকে কিছু বিষয় মনে রাখা উচিত—
- আপনার Intended Professor এর গবেষণা সম্পর্কে মূল কিছু ধারনা নিন।
- আপনার Graduation এর Thesis or Project টা review করে নিন এবং ঐ সম্পরক্রিত মূল কিছু বিষয় সম্পর্কে ধারনা রাখুন।
- আপনার বাসার ইন্টারনেট সংযোগ টি ভাল থাকা আবশ্যক। Don’t depend only on router. A back up support like Modem is better to keep.
কীভাবে আবেদন করা যাবে?
১. আবেদনপত্রের তথ্য ও ফরম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে লিখিতভাবে সরাসরি প্রতিষ্ঠানের অফিসে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
২. আপনি চাইলে আবেদনপত্রের ফরমটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
৩. কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইনে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সুবিধা রয়েছে।
ভর্তি কর্তৃপক্ষ ডকুমেন্টেশন, ট্রান্সলেশন ও ভিসাসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য আপনাকে জানাবে।
প্রয়োজনীয় তথ্য ও ডকুমেন্টেশন সম্পন্ন করার জন্য আপনি কমপক্ষে এক বছর আগে থেকেই খোঁজখবর রাখতে পারেন।
দরকারি কাগজপত্র
- আবেদনপত্রের ফরমটি সম্পূর্ণভাবে পূরণ করতে হবে।
- মার্কশিটসহ সব শিক্ষাগত ডকুমেন্টসের ইংরেজি কপি হতে হবে।
- IELTS / TOEFL পরীক্ষার ফলাফল লাগবে।
- আপনার পাসপোর্টের ফটোকপি রাখতে হবে।
নিম্নলিখিত তথ্যগুলো সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে দিতে হবে:
- আপনার আন্ডার-গ্র্যাজুয়েট/পোস্ট-গ্র্যাজুয়েটের আবেদনপত্রটি জমা দিতে হবে।
- আপনার একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের অফিশিয়াল কপি জমা দিতে হবে|
- আপনি যেখান থেকে কোর্সটি সম্পন্ন করেছেন, সেখানকার ডিপার্টমেন্টের প্রধানের কাছ থেকে অফিশিয়াল চিঠি সংযুক্ত করতে হতে পারে।
- আপনার শিক্ষাগত পর্যায়ের বর্ণনা কোর্সের বিস্তারিত বর্ণনা।
- আপনি কতগুলো ক্রেডিট সম্পন্ন করেছেন তার বর্ণনা।
- আপনার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবহৃত গ্রেডিং পদ্ধতির বর্ণনা।
- কোর্সটি শেষ করতে যত ক্রেডিট দরকার তার বর্ণনা।
মনবুশো শিক্ষাবৃত্তিঃ
জাপানে উচ্চশিক্ষা নিতে আসার জন্য সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে, মনবুশো শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে আসা। মনবুশো বৃত্তি দু’ভাবে পেতে পারেন।
১) ঢাকাস্থ জাপানের দূতাবাসে আবেদন করে, মেধার ভিত্তিতে পেতে পারেন এই বৃত্তি যেটাকে আমরা বলতে বলি Embassy recommendation Scholarship।
২) জাপানেরই কোনো নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো অধ্যাপক বরাবর ইমেইল লিখে যোগাযোগ করে পেতে পারেন শিক্ষাবৃত্তি, যেটাকে বলা হয় University Recommendation Scholarship।
বাংলাদেশ থেকে যারা Graduation শেষ করেছেন তাদের জন্য Masters or PhD তে যাবার জন্য দ্বিতীয়টিতে (University Recommendation Scholarship ) বৃত্তি পাবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কাজেই এই শিক্ষাবৃত্তি পেতে, আপনাকে প্রথমে আপনার গবেষণার আগ্রহের উপর উপর ভিত্তি করে, প্রফেসর সন্ধান করতে হবে। এরপর প্রফেসর বরাবর ইমেইল এর মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হবে। শিক্ষাবৃত্তি পেতে কিভাবে আপনি আবেদন করবেন সে ব্যাপারে, প্রফেসর আপনাকে পরবর্তী নির্দেশনা দিবেন।
বৃত্তির পরিমানঃ
১) ১৪৩০০0- ১৪৮০০০ ইয়েন প্রতি মাসে।
২) কোন টিউশন ফি নাই।
৩) বাংলাদেশ হতে জাপানে আসা এবং যাওয়ার বিমান টিকিট।
এসবকিছু নিয়ে আরও বিস্তারিত জানার জন্য দেখতে পারেন এই লিংকটিঃ
http://www.uni.international.mext.go.jp/
নিচে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের ঠিকানা উল্লেখ করা হলোঃ
https://www.u-tokyo.ac.jp/en/index.html
http://www.kyoto-u.ac.jp/en
http://www.osaka-u.ac.jp/en
http://www.titech.ac.jp/english
http://www.keio.ac.jp/
http://www.kyushu-u.ac.jp/english/ index.php
http://www.nagoya-u.ac.jp/en
http://www.hokudai.ac.jp/en/index.html
http://www.tsukuba.ac.jp/english
http://www.kobe-u.ac.jp/en
http://www.chiba-u.ac.jp/e/
http://www.waseda.jp/top/index-e.html
http://www.hiroshima-u.ac.jp/index.html
http://www.okayama-u.ac.jp/index ehtml
http://www.sut.ac.jp/en/
http://www.metro-u.ac.jp/index-e.html
http://www.tmd.ac.jp/TMDU-e
http://www.ynu.ac.jp/index en.html
http://www.tokushima-u.ac.jp/english/
জাপানে পড়াশুনা ও শিক্ষাবৃত্তির বিস্তারিত তথ্য Read More »